গোপালগঞ্জে সেনাসদস্যের ওপর হামলা, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১০৬ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি ৩ হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকালে ১০ বেঙ্গল রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাকসুদুল আলম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বিষয়টি গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদে ১০ আগস্ট বিকেলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে গোপালগঞ্জ সদরের গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডে দেশি অস্ত্র নিয়ে মহড়া ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে অসংখ্য গাড়ি আটকা পড়ে।
খবর পেয়ে গোপালগঞ্জে কর্তব্যরত সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের মহাসড়ক ছেড়ে দিতে বলেন। তখন সেনাসদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তারা সেনাসদস্যদের ওপর হামলা করেন। এতে সেনাবাহিনীর ৪ কর্মকর্তাসহ ৯ জন আহত হন। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর দুটি রাইফেল, ছয়টি ম্যাগাজিন ছিনিয়ে নিয়ে একটি গাড়িতে আগুন ও দুটি গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। পরে দুটি অস্ত্র ও তিনটি তিনটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বেআইনি জনতাবদ্ধে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা করার জন্য সরকারি কাজে বাধা দিয়ে হত্যার লক্ষ্যে সরকারি কর্মচারীদের মারধর করে গুরুতর জখম, অস্ত্র কেড়ে নিয়ে সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম, গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাহেব আলী টুকু, সাবেক চেয়ারম্যান লাচ্চু শরীফ, তার দুই ভাই কিচলু শরীফ ও পলাশ শরীফ, শুকতাইল ইউপির চেয়ারম্যান রানা মোল্লা, সাবেক চেয়ারম্যান আবেদ শেখ, জালালাবাদ ইউপির সাবেক দুই চেয়ারম্যান সুপারুল আলম ও হেমায়েত হিমু প্রমুখ।
সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনো কোনো আসামি গ্রেপ্তার হননি।