আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে তাদের পরিবার। রোববার (১৮ই আগস্ট) সুপ্রিম কোর্ট মাজার গেট এলাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ মানববন্ধন করা হয়। গ্রেপ্তারদের পরিবারের দাবি, মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্ম হয়নি এমনকি সে সময় ১০ বছর বয়স ছিল তাদেরকেও আসামি করা হয়েছে বলেও জানান তারা। দ্রুত ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে মিথ্যা মামলায় ভুক্তভোগীদের খালাস দেয়ার দাবি জানান আইনজীবীরা।
স্বজনদের দাবি, পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, এ ট্রাইব্যুনালে ৩০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ মামলাগুলোতে ১১৩ জন গ্রেপ্তার রয়েছে। আরও ৫৪ জন বিচারাধীন মানুষ বিনা চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যুবরণ করেছে। গত ১৫ই জুন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান অবসরে যাওয়ার পর অদ্যাবধি ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত না হওয়ায় আসামিরা বিনা বিচারে একের পর এক মৃত্যুবরণ করছে। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের প্রতিহিংসার শিকার বয়োবৃদ্ধ আসামিদের ফাঁসাতে আজ্ঞাবহ জজ ও প্রসিকিউটর নিয়োগ দিয়ে নিরীহ বয়োবৃদ্ধ আসামিদের দিনের পর দিন অবিচার আর বিচারিক আয়নাঘর বানিয়ে তিল তিল করে হত্যা করছে। বর্তমান বিপ্লবের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকারের কাছে আবেদন যাতে ন্যায়বিচারক জজ নিয়োগ দিয়ে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে সুবিচারের মাধ্যমে আসামিদের মুক্তির জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
স্বৈরাচার সরকার এ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করেছিল তার প্রতিপক্ষ বিরোধী দলের নেতাদেরকে ফাঁসি দিতে। ট্রাইব্যুনালে তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউটরদের ব্যক্তিগত অনৈতিক স্বার্থে ট্রাইব্যুনালকে চালু রাখতে বয়োবৃদ্ধ পিতাদের ট্রাইব্যুনালের কাঁচামাল বানিয়েছে।
এখানে কেউ ন্যায়বিচার পায়নি। সরকার পক্ষ আর্থিক লোভ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে সব সময়, আসামি পক্ষে কেউ সাক্ষ্য দিতে এলে পা ভেঙে দিতে বলেছিল মন্ত্রীরা, আসামিপক্ষে তবুও সাহস করে কেউ এলে তাদের গুম করেছে সাদা পোশাকের পুলিশ। তাদের কাউকে ভারতের কারাগারে কাউকে আয়না ঘর থেকে ৮ বছর পর উদ্ধার করা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবীকেও গুম করেছে। বিদেশি অসংখ্য পত্রিকায় এখানে সরকারের অবিচারের কথা ফুটে উঠেছে। দেশি সংবাদ মাধ্যম টিভি, যারাই সত্য সংবাদে এ বিচারের অনিয়ম তুলে ধরেছে সেটাই বন্ধ করে সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের দেশছাড়া করেছে। বিদেশি আইনজীবীদের আসতে দেয়নি। বিদেশি সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানসহ দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ট্রাইব্যুনালে স্বচ্ছতা নিয়ে কথা বলায় কন্টেম্পট করে শাস্তি দিয়েছে। যে বা যারা ট্রাইব্যুনালের অবিচার নিয়ে কথা বলেছে তাদেরই ট্রাইব্যুনাল আদালত অবমাননার শাস্তি দিয়েছে। স্কাইফি কেলেঙ্কারির পর জজ সাহেবদের পদত্যাগ প্রমাণ করে এখানে সরকার ন্যায়বিচারের পরিবর্তে জুডিশিয়াল কিলিং করেছে। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এ ট্রাইব্যুনালের সব অনিয়মের প্রতিবাদ করেছে।