বিক্ষোভ মোকাবিলায় সরকারের ভুল স্বীকার করলেও সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন এই বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠার পেছনে একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত ছিল। ‘‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা এর পেছনে জড়িত ছিল। কারণ ১৫ জুলাই থেকে অনেক আন্দোলনকারী আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত ছিল। গত ১৫ বছরে আমাদের জঙ্গিবাদের সফল নিয়ন্ত্রণের কারণে বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া খুবই কঠিন। কেবল একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাই দেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার ও বিক্ষোভকারীদের সরবরাহ করতে পারে।’’
৫ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে তার মায়ের চলে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জয় বলেন, এমনকি পরিস্থিতি এত দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে তা একদিন আগেও তিনি বা তার মা কেউই ভাবেননি। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া ভিডিও সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘তার (শেখ হাসিনা) দেশ ছাড়ার কোনও ইচ্ছা ছিল না। তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছিলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন এবং জনগণের উদ্দেশ্যে দেওয়া বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেবেন। আমি বিশ্বাস করি, তিনি বিবৃতিটির খসড়া তৈরি করছিলেন এবং সাক্ষাৎকার রেকর্ড করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সবকিছু পরিকল্পিত ছিল। তিনি রেকর্ডিং শুরু করতে যাচ্ছিলেন, এমন সময় বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বলেন, ‘‘ম্যাম, সময় নেই। আমাদের এখনই যেতে হবে।’’
বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে শেখ হাসিনা ভারতে রয়েছেন। সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘‘তিনি বাংলাদেশে কী ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয় তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন। আপাতত তিনি ভারতে থাকবেন।’’
শেখ হাসিনার অন্য কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল কি না জানতে চাইলে জয় বলেন, ‘‘তাকে হেলিকপ্টারে করে দেশ থেকে চলে যেতে হয়েছে। তাই তার একমাত্র গন্তব্য ছিল ভারত। তার জীবন বাঁচানোয় এবং তাকে অত্যন্ত সুরক্ষিত স্থানে নিয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র) মোদির সরকারকে ধন্যবাদ। তারা দ্রুত সাড়া দিয়েছে… তাই তিনি নিরাপদ আছেন। এছাড়া বিভিন্ন দেশে তার আশ্রয়ের আবেদন করার বিষয়ে যেসব প্রশ্ন উঠেছে তার সবগুলোই গুজব। এসব একেবারে মিথ্যা। তিনি কোথাও আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেননি।’’
ভারতের প্রতি তার বার্তা কী হবে, জানতে চাইলে জয় নয়াদিল্লিকে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশের সংবিধান সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি আশা করব, ভারত নিশ্চিত করবে যে, ৯০ দিনের সাংবিধানিক সময়সীমার মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, অরাজকতা বন্ধ হবে এবং আওয়ামী লীগকে প্রচারণা ও পুনর্গঠনের অনুমতি দেওয়া হবে। যদি সেটা নিশ্চিত করা হয়, আমি এখনও নিশ্চিত যে আমরা নির্বাচনে জয়ী হব। আমরা এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় দল।
শেখ হাসিনার সাথে দেখা করার জন্য তিনি ভারত ভ্রমণ করবেন কি না, জানতে চাইলে জয় বলেন, তিনি ভারতে যেতে চান। কিন্তু কখন তিনি যেতে পারবেন তা নিশ্চিত নয়।