আওয়ামী লীগ নেতা ও ঢাকা-১৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লাহর বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্লবী এলাকায় মন্দির দখলের অভিযোগ উঠেছে। টানা চারবারের এই এমপির লোকজন সেবায়েতদের মারধর করে ‘শ্রীশ্রী গৌর নিতাই মন্দির’ দখল করেছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। তারা এ ঘটনায় জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় শ্রীশ্রী গৌর নিতাই মন্দির পরিচালনা কমিটি ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম।
আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ২০০৮ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ইলিয়াস মোল্লাহ। এর পর টানা তিনবার জাতীয় সংসদে দলটির প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর আত্মগোপনে চলে যান ইলিয়াস মোল্লাহ। তিনি পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটির সভাপতি ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মন্দিরের সেবায়েত ড. সুবেন্দু তালুকদার বলেন, ‘ইলিয়াস মোল্লাহর ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসী কায়দায় সুধীর ও তার সাঙ্গোপাঙ্গ মন্দির দখল, আমাকে ও আমার সঙ্গে থাকা মন্দিরের ভক্তদের অমানুষিক নির্যাতন করে অন্যায়ভাবে ২০১৮ সালে মন্দির থেকে বের করে দেয়। দফায় দফায় মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানি করা হয়। আমি সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, থানা পুলিশ, জেলা প্রশাসক, আর্মি দপ্তরসহ সব জায়গায় যোগাযোগ করেও স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রভাবে মন্দিরটি ফিরে পেতে ব্যর্থ হই। আমার প্রাণনাশের হুমকিও ছিল।’
তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালের ২৫ মে মিরপুরে ক্যান্টনমেন্টে ১২ নম্বর চাকুলী মন্দির ও পূজা কমিটি মন্দিরটি পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে এটি যথাযথ উন্নয়ন এবং সুস্থ পরিচালনার জন্য অধ্যাপক ড. নির্মল কান্তি মিত্র, মিরপুর ডিওএইচএস-সংলগ্ন অবসরপ্রাপ্ত হিন্দু সেনা কর্মকর্তা ও জনসাধারণের বৈঠকের মাধ্যমে সরকারি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে দালিলিকভাবে আমাদের পরিচালনা কমিটির কাছে মন্দির হস্তান্তর করেন। হস্তান্তরের পর জানা যায়, মন্দিরের যে জায়গা আমাদের হস্তান্তর করা হয়েছে, সেই দাগ নম্বরের জমি এটি নয়। পরে জমিসংক্রান্ত ঝামেলা মিটিয়ে মূল মন্দির নির্মাণ শুরু হওয়ার পর থেকে স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লাহর সহযোগিতায় সুধীর ও তার সহযোগীরা মন্দির দখলের অপচেষ্টা শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে ইলিয়াস মোল্লাহ নিজে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সুধীর ও তার দলবলের মাধ্যমে পূজার নামে আমাকে হস্তান্তর করা অস্থায়ী মন্দির থেকে আমাকেসহ ভক্তের মারধর করে এবং মন্দিরের প্রায় ১০ লাখ টাকার মালপত্র লুট করে নিয়ে যায়।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, ঢাকা প্রণবমঠ অধ্যক্ষ গণেশ মহারাজ, জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কালীপদ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক মানিক চন্দ্র সরকার, হিন্দু যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুমন গোস্বামী পুলক প্রমুখ।